নাজমুল হাসান নিরব, ফরিদপুর প্রতিনিধি: ২০২৩ সালের এইচ.এস.সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েও অর্থাভাবে উচ্চ শিক্ষাগ্রহণের স্বপ্ন অনিশ্চিত মো:এজাজুল করিমের।সে এবছর খরসূতী বঙ্গবন্ধু সরকারী কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে।এজাজুলের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের চন্দনী গ্রামে। সে এবছর বোয়ালমারী উপজেলা থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে একমাত্র জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছাত্র।
শিশুকাল থেকে নিদারুন অর্থকষ্টের মধ্যে শুরু করেন পড়াশোনা। তার বাবা রিহাদ মোল্যা(৫০) পেশায় কৃষক।নিজের জমি-জমা তেমন না থাকায় অন্যের জমিতে কাজ করাই সংসার চালানোর চালিকাশক্তি।পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে এজাজুল সেজো।বড়ভাই বিয়ের পর আলাদা সংসার গড়েছে। মেঝোভাই (২৩)মানসিক প্রতিবন্ধী। চতুর্থ ভাই (১৬) রাজমিস্ত্রির যোগালে। ছোটভাই (১০) চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে।বর্তমানে এজাজুলের বাবা অধিকাংশ সময় অসুস্থ থাকে।এজাজুল বিভিন্ন সময়ে অর্থকষ্টে রাজমিস্ত্রির জোগালে হিসাবে কাজ করে।করোনাকালীন সময়ে দীর্ঘদিন স্কুল -কলেজ বন্ধ থাকায় নিয়মিত ভাবে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে থাকে। শিক্ষাজীবন বারবার দারিদ্রতার কাছে হার মেনে থমকে যেতে চাইলেও এজাজুলের অদম্য ইচ্ছা শক্তি এবং শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় ধারাবাহিকভাবে সাফল্য অর্জন করতে থাকে। সে উমরনগর চন্দনী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ২০২১সালে এসএসসি পাশ করে।সে বড় হয়ে ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সেই স্বপ্ন ফিকে হতে চলেছে।
এজাজুল আজও স্বপ্ন দেখে বুয়েট-মেডিকেল বা ভার্সিটিতে পড়তে না পারলেও যেনো মানুষের মতো মানুষ হয়।ভবিষ্যতে তার মতো অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর সামর্থ্য আল্লাহ যেনো তাকে দেন।
অদম্য এজাজুলদের থমকে যেতে নেই। এজাজুলের মা বলেন- অন্য মা দের মতো আমিও স্বপ্ন দেখি আমার এজাজুলকে নিয়ে। কিন্তু আমাদের সামর্থ্য যে নেই!!!যতটুকু সাধ্য ছিল তা করেছি।ছেলেটার মুখের দিকে তাকালে ভাষা খুঁজে পাইনা।সরকারী /বেসরকারি কোন সহযোগীতা পেলে আমার এজাজুল এলাকার মুখ উজ্জ্বল করবে।
খরসূতী চন্দ্রকিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আল মামুন রনী বলেন- অদম্য এজাজুলের প্রবল ইচ্ছাশক্তি, মানষিক দৃঢ়তা আর সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা ওর লক্ষ্যে পৌছে দিবে।